... সমুদ্রের তীর...
যেখানে একটু একটু করে মাটি শেষ হয়ে মিশে যাচ্ছে জলে...
ফুরিয়ে যাচ্ছে দেশ,দেশভাগ...
যেখানে বসে সামনে তাকালে শুধু অথৈ জল... অথৈ গভীরতা...
অপার সমুদ্র যেখান থেকে এগিয়ে যেতে যেতে মিশে যায় দিগন্তে...
যে সমুদ্রতীর বুক পেতে নিতে থাকে সব ঢেউ...
একটু একটু করে ভেঙে যায় রোজ... একটু একটু করে গড়ে ওঠে রোজ....
সাক্ষী থাকে...
অসংখ্য সমুদ্রযাত্রা... অসংখ্য নৌকাডুবির...
আর... প্রতিটা সৌরদিনের...
সের'মই একটা সমুদ্রতীরে বসে আছে বদনাম...
সূর্য ডুবছে দূরে...
ভীড় নেই.. গাঢ় লাল সূর্য-ঘেরা সোনালী তেজ মৃদু হয়ে মিশে যাচ্ছে নোনাজলে...
ভেজা বালির ওপর পা রেখে বসে আছে বদনাম...চুপচাপ...
ফোনে নেটওয়ার্ক নেই... বেনামীর সঙ্গে কথা হয়নি সকাল থেকে...
একটু দূরে একদল লোকজন... কাচের বোতলের শব্দ আর অস্পষ্ট হইহই মাঝেমাঝে বাড়ছে...
মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে ফিরতি পথের পাখি, একটা -দুটো...
... এইখানে এই আর্ট এক্সিবিশনে সুযোগ পেয়ে ওর আনন্দ হওয়ার আগে কান্না পেয়েছিল...
আর বেনামী... একদম ওর স্বভাববিরুদ্ধ হয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল- "এই তো সবে শুরু! "
- বালির ওপর ছোটদের মতো আঁকিবুকি কাটতে কাটতে এসব কথা এলোমেলো মনে পড়ছিল...
বেনামীর সাথে ওর এই এক বিচ্ছিরি মিল...
নির্জনতা ভালোলাগা... নির্জনতা খুঁজে নিতে পারা...
আর এইরকম চুপচাপ বসে হাসা-কাঁদা-ভাবা...
... গ্যালারীর উজ্জ্বল আলোয় ওর কাজগুলো একটা একটা করে মনে পড়ে বদনামের...
বুকপকেট থেকে ওর ছোট্ট নোটবুকটা বের করে... এলোমেলো স্কেচের ভেতর এখানেই ও লিখে রাখে প্রতিটা ছবির গল্প - ভূমিকা..
সন্ধ্যে নামছে... আবছা আলোয় যেন আরও বেশী জীবন্ত হয়ে যায় গল্পগুলো...
এখানে ওরা পাঁচটা ছবি পছন্দ করেছে... যেগুলো এখন গ্যালারির সামনে বাঁদিকে সাজানো পরপর...
এগুলোরও গল্প আছে...
বদনাম খুঁজে নেয়... তারপর স্মৃতির সঙ্গে আরেকবার মিলিয়ে নেয়...
প্রথম ছবিটায় কোনো দাগ নেই... আলোছায়া আর জলরঙ... হালকা আর গাঢ় মিশে মিশে রেখা তৈরী হয়েছে...
বদনাম ছবিটার নাম দিয়েছিল 'ঢেউ', বেনামীর গলায় প্রথম পূজা পর্যায়ের সেই গানটা শোনার পর আঁকা ওই ছবিটা... বেনামীকে প্রথম কাঁদতে দেখেছিল সেদিন...
দ্বিতীয় ছবিটা তেলরঙে...পানা পুকুর ভরা শালুক ফুলের ছবি, কী জানি কেন ছবিটার নাম দিয়েছিল 'ব্লসম'.... সেই যেদিন বিকেলের পড়ন্ত আলোয় বদনাম, বেনামীর বৃষ্টিভেজা পা ছুঁয়েছিল, সেদিন সন্ধ্যেয় ফিরেই ক্যানভাসটায় রং দিয়েছিল ও...
পরের দুটো ছবিই কলকাতা শহরের... মিক্সড মিডিয়া... ঠিক শহরটার মতোই...
বদনাম ... এই সিরিজটার নাম দিয়েছিল 'বাড়ি'... বেনামী
প্রতিটা ছবির জন্য গান লিখেছিল... আর সেই গান শুনতে শুনতে ছবিগুলো শেষ হয়েছিল রাত জেগে...
পাঁচ নম্বর ছবিটা ওয়াশে করা... বদনাম নাম দিয়েছিল 'আলো', একটা মেয়ের পিঠে ছড়িয়ে থাকা এলোমেলো চুলের ছবি...
বদনাম যেদিন প্রথম বেনামীর বুকে মাথা রেখেছিল ছবিটা তার পরদিন ভোরে শুরু করা...
....বদনাম বুঝতেই পারেনি কখন ওর চোখে জল এসেছে...
পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে আরও কত গল্প...
সিলেকশনের জন্য যখন ছবি পাঠাতে হবে তখন বেনামীর সঙ্গে ওর ভীষণ ঝড়-বিদ্যুৎ...তারিখ-তাগাদা সেই সময়ের মতো অধৈর্য ওকে করেনি কোনোদিন... তার ওপর জীবনের সবথেকে বড়ো 'এপ্রিল ফুল' হবার মাসটা, সেই মাসের সঙ্গে মিলে গিয়ে কেমন একটা ভয় পাইয়ে দিচ্ছিল ওকে...
ভীষণ জেদ করে, খুঁজে খুঁজে পেন অ্যান্ড ইঙ্কের কাজগুলো বার করেছিল, বেছেছিল 'ড্রাউনড্', ' অদর্শন' আর 'অভিমান'...মন ভালো ছিল না... বলা ভালো মন খারাপ ছিল...
জমা দেওয়ার দিনের আগের রাতে... ফোনের ওপাশে বেনামীর গলা...
- " একটাও রঙের কাজ দিবি না ঠিক করেছিস তো ?... "
'অভিমান'-টা সরিয়ে রেখে বদনাম পাঠিয়েছিল জলরঙের কাজ 'বৃষ্টি'....
....নোটবুকটা বন্ধ করে বদনাম আবার বুকপকেটে রাখে...
বেনামীকে দেখতে ইচ্ছে করে খুব...
ঠিক ওই সময়ে দু'বার কেঁপে ওঠে হাতের মুঠোর ফোনটা...
...মেসেজ বক্সে বেনামীর হাসি- "আজ পূর্ণিমা রে..."
.... সমুদ্রে এসে ভিজিয়ে দেয় পা...
বদনাম ভাবতে থাক ওর জীবন বেনামীর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে না বেনামীর জীবন ওর সঙ্গে...?
যেখানে একটু একটু করে মাটি শেষ হয়ে মিশে যাচ্ছে জলে...
ফুরিয়ে যাচ্ছে দেশ,দেশভাগ...
যেখানে বসে সামনে তাকালে শুধু অথৈ জল... অথৈ গভীরতা...
অপার সমুদ্র যেখান থেকে এগিয়ে যেতে যেতে মিশে যায় দিগন্তে...
যে সমুদ্রতীর বুক পেতে নিতে থাকে সব ঢেউ...
একটু একটু করে ভেঙে যায় রোজ... একটু একটু করে গড়ে ওঠে রোজ....
সাক্ষী থাকে...
অসংখ্য সমুদ্রযাত্রা... অসংখ্য নৌকাডুবির...
আর... প্রতিটা সৌরদিনের...
সের'মই একটা সমুদ্রতীরে বসে আছে বদনাম...
সূর্য ডুবছে দূরে...
ভীড় নেই.. গাঢ় লাল সূর্য-ঘেরা সোনালী তেজ মৃদু হয়ে মিশে যাচ্ছে নোনাজলে...
ভেজা বালির ওপর পা রেখে বসে আছে বদনাম...চুপচাপ...
ফোনে নেটওয়ার্ক নেই... বেনামীর সঙ্গে কথা হয়নি সকাল থেকে...
একটু দূরে একদল লোকজন... কাচের বোতলের শব্দ আর অস্পষ্ট হইহই মাঝেমাঝে বাড়ছে...
মাথার ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে ফিরতি পথের পাখি, একটা -দুটো...
... এইখানে এই আর্ট এক্সিবিশনে সুযোগ পেয়ে ওর আনন্দ হওয়ার আগে কান্না পেয়েছিল...
আর বেনামী... একদম ওর স্বভাববিরুদ্ধ হয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল- "এই তো সবে শুরু! "
- বালির ওপর ছোটদের মতো আঁকিবুকি কাটতে কাটতে এসব কথা এলোমেলো মনে পড়ছিল...
বেনামীর সাথে ওর এই এক বিচ্ছিরি মিল...
নির্জনতা ভালোলাগা... নির্জনতা খুঁজে নিতে পারা...
আর এইরকম চুপচাপ বসে হাসা-কাঁদা-ভাবা...
... গ্যালারীর উজ্জ্বল আলোয় ওর কাজগুলো একটা একটা করে মনে পড়ে বদনামের...
বুকপকেট থেকে ওর ছোট্ট নোটবুকটা বের করে... এলোমেলো স্কেচের ভেতর এখানেই ও লিখে রাখে প্রতিটা ছবির গল্প - ভূমিকা..
সন্ধ্যে নামছে... আবছা আলোয় যেন আরও বেশী জীবন্ত হয়ে যায় গল্পগুলো...
এখানে ওরা পাঁচটা ছবি পছন্দ করেছে... যেগুলো এখন গ্যালারির সামনে বাঁদিকে সাজানো পরপর...
এগুলোরও গল্প আছে...
বদনাম খুঁজে নেয়... তারপর স্মৃতির সঙ্গে আরেকবার মিলিয়ে নেয়...
প্রথম ছবিটায় কোনো দাগ নেই... আলোছায়া আর জলরঙ... হালকা আর গাঢ় মিশে মিশে রেখা তৈরী হয়েছে...
বদনাম ছবিটার নাম দিয়েছিল 'ঢেউ', বেনামীর গলায় প্রথম পূজা পর্যায়ের সেই গানটা শোনার পর আঁকা ওই ছবিটা... বেনামীকে প্রথম কাঁদতে দেখেছিল সেদিন...
দ্বিতীয় ছবিটা তেলরঙে...পানা পুকুর ভরা শালুক ফুলের ছবি, কী জানি কেন ছবিটার নাম দিয়েছিল 'ব্লসম'.... সেই যেদিন বিকেলের পড়ন্ত আলোয় বদনাম, বেনামীর বৃষ্টিভেজা পা ছুঁয়েছিল, সেদিন সন্ধ্যেয় ফিরেই ক্যানভাসটায় রং দিয়েছিল ও...
পরের দুটো ছবিই কলকাতা শহরের... মিক্সড মিডিয়া... ঠিক শহরটার মতোই...
বদনাম ... এই সিরিজটার নাম দিয়েছিল 'বাড়ি'... বেনামী
প্রতিটা ছবির জন্য গান লিখেছিল... আর সেই গান শুনতে শুনতে ছবিগুলো শেষ হয়েছিল রাত জেগে...
পাঁচ নম্বর ছবিটা ওয়াশে করা... বদনাম নাম দিয়েছিল 'আলো', একটা মেয়ের পিঠে ছড়িয়ে থাকা এলোমেলো চুলের ছবি...
বদনাম যেদিন প্রথম বেনামীর বুকে মাথা রেখেছিল ছবিটা তার পরদিন ভোরে শুরু করা...
....বদনাম বুঝতেই পারেনি কখন ওর চোখে জল এসেছে...
পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে আরও কত গল্প...
সিলেকশনের জন্য যখন ছবি পাঠাতে হবে তখন বেনামীর সঙ্গে ওর ভীষণ ঝড়-বিদ্যুৎ...তারিখ-তাগাদা সেই সময়ের মতো অধৈর্য ওকে করেনি কোনোদিন... তার ওপর জীবনের সবথেকে বড়ো 'এপ্রিল ফুল' হবার মাসটা, সেই মাসের সঙ্গে মিলে গিয়ে কেমন একটা ভয় পাইয়ে দিচ্ছিল ওকে...
ভীষণ জেদ করে, খুঁজে খুঁজে পেন অ্যান্ড ইঙ্কের কাজগুলো বার করেছিল, বেছেছিল 'ড্রাউনড্', ' অদর্শন' আর 'অভিমান'...মন ভালো ছিল না... বলা ভালো মন খারাপ ছিল...
জমা দেওয়ার দিনের আগের রাতে... ফোনের ওপাশে বেনামীর গলা...
- " একটাও রঙের কাজ দিবি না ঠিক করেছিস তো ?... "
'অভিমান'-টা সরিয়ে রেখে বদনাম পাঠিয়েছিল জলরঙের কাজ 'বৃষ্টি'....
....নোটবুকটা বন্ধ করে বদনাম আবার বুকপকেটে রাখে...
বেনামীকে দেখতে ইচ্ছে করে খুব...
ঠিক ওই সময়ে দু'বার কেঁপে ওঠে হাতের মুঠোর ফোনটা...
...মেসেজ বক্সে বেনামীর হাসি- "আজ পূর্ণিমা রে..."
.... সমুদ্রে এসে ভিজিয়ে দেয় পা...
বদনাম ভাবতে থাক ওর জীবন বেনামীর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে না বেনামীর জীবন ওর সঙ্গে...?
No comments:
Post a Comment